ম্যানিকিউর ও পেডিকিউর কি ভাবে করবেন ?

ম্যানিকিউর ও পেডিকিউর কি ভাবে করবেন :
আমাদের সবাইকে বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন বাইরে যেতে হয়। সবাই কোন না কোন কর্মক্ষেত্রে
জড়িত বাহিরে বের হওয়ার ফলে যে পরিমাণ ধুলো-বালির মধ্যে আমাদেরকে থাকতে হয় এর ফলে ধীরে
ধীরে হাত এবং পায়ের ত্বক কালো ও রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের উজ্জ্বলতা
ধরে রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত পেডিকিউর ও মেনিকিউর করা উচিত।
১। পেডিকিউর কি ?
পেডিকিউর কি ভাবে করতে হয় ?
উত্তর : পায়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে পায়ের যে যন্ত নেয়া হয়ে থাকে
তাকে পেডিকিউর বলে। এভাবে মাসে ১/২ বার পেডিকিউর করলে হাত
ও পা হবে সুন্দর, উজ্জ্বল ও মসৃণ।
পেডিকিউর করার জন্য যা উপকরন লাগবে:
১. পেডিকিউর/মেনিকিউর কিট
২. একটি গামলা
৩. কুসুম গরম পানি
৪. শ্যাম্পু
৫. ঝামাপাথর (পা ঘষার জন্য একপ্রকার প্লাষ্টিকের/ মাটির তৈরি ব্রাশ)
৬. লেবু
৭. ফুট স্ক্রাব
৮. ময়শ্চারাইজার
৯.
টোনার
যেভাবে করবেন :
১. প্রথমে কারো নেইলপলিশ লাগানো থাকলে তা উঠিয়ে ফেলুন।
২. একটি প্লাষ্টিকের বোল/ গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে এতে কিছু
শ্যাম্পু মেশান। এবার এতে পা ভেজান। ২৫-৩০ মিনিট অপেক্ষা
করুন।
৩. ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর দেখবেন পায়ের নখ একটু নরম হয়েছে। এই অবস্থায় নখ কাটুন
ও সাইজ ঠিক করুন।
৪. এবার আরও কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর একটি পা উঠিয়ে
ব্রাশে শ্যাম্পু লাগিয়ে ভালো করে পা ঘষে নিন। এবার আরেকটি পা ব্রাশ
দিয়ে ঘষে নিন।
৫. এইবার একটি ঝামাপাথর দিয়ে পায়ের নিচে ও গোড়ালি ঘষে নিন। এতে করে পায়ের মরা
চামড়া উঠে যাবে। আবার পা ভিজিয়ে রাখুন।
৬. একটি পা তুলে সেই পায়ের নখে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে রাখুন। এবার নখের উপর অরেঞ্জ
স্টিক দিয়ে নখের কিউটিকল নখের পেছনে ফিরিয়ে ঘষুন। নখের ভেতরের ময়লাও
পরিষ্কার করে ফেলুন অরেঞ্জ স্টিক দিয়ে।
৭. নখের চারপাশে কিউটিকলের আলাদা স্তর থাকলে টো-নেইল ট্রিমার
দিয়ে তা কেটে ফেলুন সাবধানে।
৮. এখন পায়ের চামড়া ও নখ একটি লেবুর টুকরা দিয়ে ৫ মিনিটের জন্য
ভালো করে ঘষুন। ঘষা শেষ হলে পা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৯. এবার স্ক্রাবিং ক্রিম হাটু পর্যন্ত লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসেজ
করুন। মাঝে মাঝে একটু পানি
লাগিয়ে নিবেন পায়ে তাহলে ম্যাসেজ করতে সুবিধা হবে ম্যাসেজ শেষ হলে পা ভালো করে ধুয়ে
মুছে ফেলুন।
১০. এবার পায়ে টোনার লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ময়শ্চারাইজার
লাগান। এবার নখের উপর নেইল শাইনার এর শক্ত পাশ দিয়ে ঘষুন
কিছুক্ষণ। শক্ত অংশ দিয়ে ঘষা শেষ হলে তুলনামূলক নরম পাশ দিয়ে
নখগুলো ঘষে ফেলুন ভালো করে। নখ ৫-৭ দিনের জন্য চকচকে থাকবে। নেইলপলিশ লাগাতে চাইলে
আগে অবশ্যই ট্রান্সপারেনান্ট বা স্বচ্ছ রঙের বেইস কোট দিয়ে নিবেন। এতে করে নখ হলুদ হবে
না। এই তো হয়ো গেল আপনার
পেডিকিউর।
২। মেনিকিউর কি ? কি ভাবে মেনিকিউর করবেন ?
উত্তর : হাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে হাতের যে যন্ত নেয়া হয়ে থাকে
তাকে মেনিকিউর বলে।
মেনিকিউর করার জন্য যা উপকরন লাগবে:
১. পেডিকিউর/মেনিকিউর কিট
২. একটি গামলা ৩. কুসুম গরম পানি ৪.
শ্যাম্পু ৫. লেবু ৬. ফুট স্ক্রাব ৭. ময়শ্চারাইজার ৮. টোনার
যেভাবে করবেন :
ঠিক একই ভাবে মেনিকিউর করবেন। তবে হাতে ঝামাপাথর
ব্যবহার করবেন না। পায়ের যতেœ অর্থাৎ পেডিকিউর করাতেও এগুলো কাজে লাগে। এসব কিটে ফাইলার, বাফারসহ বিভিন্ন সামগ্রী
থাকে। হাতের কালচে বরন, মৃত কোষ পরিষ্কারে
মাসে অন্তত দুইবার ম্যানিকিউর করা যেতে পারে। এ জন্য বেশ কিছু ধাপ
মেনে চলতে হবে।
১. নখে নেইলপলিশ থাকলে রিমুভার দিয়ে সবার আগে সেটা তুলে ফেলুন। হাতের নখ কেটে নিন। তারপর নেইল ফাইলার
দিয়ে ফাইল করে নিন।
২. এরপর একটি বাটিতে কুসুম গরম পানি নিন। এতে সামান্য পরিমাণ
সি-সল্ট বা লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। স্ক্রাবের কাজ করবে। এবার একটি পরিষ্কার
তোয়ালে পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে হাত পরিষ্কার করে মুছে নিন। যদি এত কিছু করতে
না চান তাহলে হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু গুলে হাত ভিজিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। পানিতে সামান্য লবণ
কিংবা লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। এতে জীবাণু কমে যায়। তারপর হাত-পা পানি
থেকে উঠিয়ে স্ক্র্যাব করে নিন। নখে একটু ভ্যাসলিন লাগিয়ে চারপাশ পরিষ্কার করে নিন।
৪. এবার স্ক্রাবিং। প্রতিটি হাত নরম ব্রাশ
দিয়ে ৫ মিনিট করে মালিশ করে নিন। মালিশের সময় হাতের আঙুলগুলো টান টান করে রাখা ভালো।
৫. স্ক্রাবিং হয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে মুছে নিন। মুলতানি মাটি, সামান্য হলুদ মিশিয়ে
তৈরি প্যাক লাগান। প্যাক শুকিয়ে গেলে কবজি পর্যন্ত দুই হাত হালকা গরম
পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
৬. এবার নখ। কিউটিক্যাল জেল একটা নেইল স্টিকে নিয়ে নখের ওপর মেখে
নিন। এই জেল কিন্তু শুধুই
নখের জন্য। এর সঙ্গে স্টিকের কম ধারালো অংশ দিয়ে ঘষে নখের ওপর
জমে থাকা ধুলোবালি কিংবা ডেড পার্ট তুলে ফেলুন।
৭. নখ পরিষ্কার হয়ে গেলে পানি দিয়ে মুছে নিন। এবার এক টুকরো লেবু
দিয়ে আবারও নখ পরিষ্কার করে নিন।
৮. কিউটিক্যাল কাটার দিয়ে নখের দুপাশের মরা চামড়া তুলে ফেলুন। একই যন্ত্র দিয়ে নখের
বাড়তি অংশও কেটে নিন। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন, আপনি নখে কী ধরনের
আকৃতি দিতে চান। একেক জনের নখের ধরন অনুযায়ী নখটা কেটে নিন।
৯. ত্বকের শুষ্কতা রোধের জন্য ময়েশ্চারাইজারের কোনো বিকল্প নেই। সামান্য পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার
ব্যবহার করুন।
১০. ঝটপট নেইলপলিশ লাগিয়ে নিন। যাঁরা নেইলপলিশ দিতে
চান না, তাঁরা বাফার দিয়ে
ঘষে নখটা আরেকটু পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
নব কম্পিউটার এন্ড ট্রেনিং সেন্টার ; পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড, মাধবদী, নরসিংদী