বেনী পাম্প করা, হেয়ার রিবন্ডিং করা
বেনী পাম্প করা / হেয়ার রিবন্ডিং করা :
সব মেয়েদের চুল আমরা সবাই সোজা দেখতে পছন্দ করি । আমরা অনেকেই শখের
বশে অথবা আনেক সময় চুল ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে বাধ্য হয়েই চুল রিবন্ডিং অথবা
স্ট্রেইট করি। চুল রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার পর এটা কিন্ত
আর আমাদের স্বাভাবিক চুল থাকে না । আর তাই এর যতœও নিতে হবে আগের
চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এই যন্তের ফলে আমরা আমাদের রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট
করা চুলকে অনেকাংশেই সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে পারি।
১। রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করা কী ?
সাধারণত রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট ২ ধরনের কেমিক্যাল ক্রিম ব্যবহার
করে করা হয়। এগুলো হচ্ছে : ১। ক্রিম সফটনার ২। নিউট্রালাইজার
ক্রিম সফটনার চুলের ন্যাচারাল বন্ডিং ভেঙে ফেলে চুলকে ইচ্ছেমত বন্ডিং সেট করতে সাহায্য
করে আর নিউট্রালাইজার চুলের নতুন বন্ডিং তৈরি করে চুলকে একটা স্ট্রেইট লুক দেয়।
২। রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার পর যে অসুবিধা গুলো
দেখা যায় তা কী কী ?
রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট যেহেতু অনেক কেমিক্যাল ব্যবহার করে এবং
চুলে অনেক হিট দিয়ে করা হয় তাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়াটা একটা সাধারণ সমস্যা
প্রায় সবার জন্য । এছাড়াও চুলের আগা ফেটে যাওয়া, চুল মলিন - প্রাণহীন
হয়ে যাওয়া,
চুল শুষ্ক
হয়ে পড়া,
অনেক সময়
চুলের কিছু অংশ বাঁকা হয়ে যাওয়াসহ আরও নানান সমস্যা দেখা দেয়।
৩। রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার পর যে অসুবিধা গুলো
থেকে পরিত্রানপেতে কী করবেন ?
সাধারণত চুল রিবন্ডিং করার এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত চুল প্রায়
সবারই ভালো থাকে । এরপর থেকেই দেখা দেয় সমস্যাগুলো । চুল রিবন্ডিং অথবা
স্ট্রেট করার পর চুলের যতœ কীভাবে নেব।
১। প্রথমত, চুল রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেট করার পর আমরা
অনেকেই চুল নিয়মিত আঁচড়াতে আলসেমি করা যাবে
না । নিয়মিত মোটা দাঁতের
চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে।
২। যারা প্রতিদিন বাইরে যান তারা সপ্তাহে দুই দিন
অন্তর অন্তর আর যারা বাসায়ই থাকেন তারা সপ্তাহে তিনদিন অন্তর অন্তর চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার
করুন।
৩। শ্যাম্পু ব্যাবহারের পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার
করুন। কন্ডিশনার দিয়ে
কমপক্ষে ৫ মিনিট চুলে রাখুন। আর কন্ডিশনার অবশ্যই চুলে লাগাবেন, খেয়াল রাখবেন চুলের
গোঁড়ায় যেন না লাগে ।
৪। চুলে সপ্তাহে ৩ দিন রাতে নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল,আমন্ড অয়েল এবং
ভিটামিন ই ক্যাপসুল একসাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে লাগান। যারা তেল বেশিক্ষণ
চুলে সহ্য করতে পারেন না তারা গোসলের আগে কমপক্ষে একঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৫। ১৫ দিন অন্তর চুলে স্পা করুন। আপনি স্পা ক্রিম
কিনে ঘরে বসেই খুব সহজেই স্পা করে নিতে পারেন।
৬। চুলে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করুন দুই সপ্তাহ অন্তত। প্রোটিন ক্রিম
কিনে ঘরে বসেই প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করা যায় অথবা আপনি চাইলে ডিম,অলিভ অয়েল মিশিয়েও
চুলে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করতে পারবেন।
৭। চুল রুক্ষ আর শুষ্ক হয়ে গেলে পাকা কলা আর মধু
দিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করুন।
৮। চুলের আগা দুই মাস অন্তর কাটুন।
৯। চুলে খুশকি থাকলে মাথার স্ক্যাল্পে লেবুর রস দিয়ে
১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন । অথবা টকদইও ব্যবহার করতে পারেন।
১০। ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করুন।
১১। চুল সবসময় খোলা রাখতে চেষ্টা করুন। খুব বেশি গরম লাগলে
হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে হাল্কা করে বেঁধে রাখুন।
১২। চুলের জন্য কেবল বাইরে থেকেই পুষ্টি না
ভেতর থেকেও পুষ্টি দিন। নিয়মিত রুটিন মেনে খাওয়া-দাওয়া করুন। খাবার তালিকায়
যেন পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার থাকে ওদিকে লক্ষ্য রাখুন।
৪। রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার পর অসুবিধা গুলো
থেকে পরিত্রানপেতে কী কী করা যাবে না ?
১। চুলে গরম পানি ব্যবহার করা যাবেনা।
২। চুলে যে কোন ধরনের হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। চুলে বেল্টা ড্রাই, স্টেটনার, কার্লার এগুলো
ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
৩। চুল কানের পেছনে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। চুল কানের পেছনে
দিলে আপনার সামনের চুলে ভাঁজ পড়ে যায়।
৪। সরাসরি সূর্যের তাপ, ধুলাবালি, বৃষ্টি যতটা সম্ভব
এড়িয়ে চলুন।
৫। চুলে বৃষ্টির পানি লাগলে যত দ্রুত সম্ভব চুল ধোয়ার
চেষ্টা করবেন।
৬। চুলে কালার, হাইলাইট এগুলো
থেকে বিরত থাকুন।
৭। চুল রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার পর চুলে মেহেদী
বা হেনা ব্যবহারে বিরত থাকুন।
৮। রিবন্ডিং অথবা স্ট্রেইট করার অন্তত দুই মাস আগ
থেকেই মেহেদী বা হেনা ব্যবহার করবেন না।
৯। রাতে শোয়ার সময় চুল গুছিয়ে শোবেন। চুল হেয়ার ব্যান্ড
দিয়ে হাল্কা করে বেঁধে ঘুমান।
১০। চুলে বেণী অথবা বেণীর মতো হেয়ারস্টাইল
করা থেকে বিরত থাকুন।
